শেয়ার কি?

শেয়ার কি?

শেয়ার ক্রয় পদ্ধতি সাধারণতঃ দুই ধরণের ১।গেঁবুৎসু তরিহিকি বা ক্যাশ ট্রেডিং ২।সিংও তরিহিকি বা ঋণ নিয়ে শেয়ার ক্রয় করা

১।গেঁবুৎসু তরিহিকি বা একটি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় বলতে কি বুঝায় ?

পুঁজিবাজারে শেয়ার বলতে একটি কোম্পানির মালিকানার অংশ বিশেষকে বোঝায়।একটি কোম্পানির ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বাড়াতে শেয়ার ইস্যু করা হয়। নগদ অর্থ দিয়ে শেয়ার ক্রয় করে ঐ কোম্পানির বিনিয়োগকারী হওয়া এবং কোম্পানির মালিকদের একজন হয়।
「শেয়ার ক্রয়」=「ঐ কোম্পানির বিনিয়োগকারী হওয়া」=「কোম্পানির মালিকদের একজন(শেয়ারহোল্ডার)」
কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং অন্যান্য কারণগুলির উপর ভিত্তি করে শেয়ার মান ওঠানামা করে, আর এই ওঠানামা ব্যবহার করে মুনাফার অর্জন করা একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পদ্ধতি

শেয়ার ট্রেডিং এর গঠন

যে সমস্ত বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করতে চানা তাদের শেয়ার কিনতে হলে,সিকিউরিটিজ কোম্পানির (ব্রোকারেজ হাউজ) সহায়তায় স্টক এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে ক্রয় করিতে হয়।শেয়ার ব্যবসা করতে হলে প্রথমে আপনাকে সিকিউরিটিজ কোম্পানির একটি একাউন্ট খুলতে হবে।


সস্তায় কিনে চড়া দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করাই শেয়ার ব্যবসার লক্ষ্য।উদাহরণস্বরূপ,যে সমস্ত সংস্থার নতুন পণ্য উন্নয়ন এবং উপার্জন বৃদ্ধির ফলে বিজনেস পারফরমেন্স প্রসারিত হয় সে সমস্ত সংস্থার শেয়ারের দাম বাড়বে।আর সেই সময়সীমার মধ্যে যদি ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রি করা যায় তবে,ক্রয় মূল্য থেকে বিক্রয় মূল্য বাদ দিয়ে বাকিটা লাভ হবে।
উদাহরণ
আপনি যদি ১০টাকা দিয়ে একটি শেয়ার কিনে থাকেন এবং ঐ শেয়ারের দাম বেড়ে ১১টাকা হয় এমত অবস্থায় শেয়ারটি বিক্রি করিলে ১টাকা লাভ করিতে পারেন 
১১টাকা(বিক্রয় মূল্য)-১০টাকা(ক্রয় মূল্য)=১টাকা (মুনাফা)
অন্য দিকে,এটাও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে,শেয়ার যে কোন  অপ্রত্যাশিতভাবে হ্রাস পেতে পারে,আর সে সময়ে শেয়ার বিক্রি করিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।আরও মনে রাখতে হবে যে,শেয়ার ইনভেস্টমেন্টের সুবিধাগুলি বাড়ানোর জন্য,কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্যতাগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝা গুরুত্বপূর্ণ।

লভ্যাংশ/হাইতো-কিন্

কোম্পানীর ব্যবসায় লাভ হলে শেয়ারহোল্ডাররা "লভ্যাংশ" হিসাবে লাভের অংশ পেতে পারেন।আবার,কোম্পানির পারফরমেন্স অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদান না করার ম্ভাবনাও রয়েছে।
উদাহরণ
যদি আপনি ১০০টি  শেয়ারের মালিক হন,আর সে ক্ষেত্রে কোম্পানি  শেয়ার  প্রতি ৫ পয়সা লভ্যাংশ দেন, তাহলে আপনি ৫০০০পয়সা লভ্যাংশ পাবেন।
১০০টি শেয়ার×৫ পয়সা=৫০০০পয়সা


শেয়ারহোল্ডার বেনিফিট/খাৰুনুষী ইউতাই 

খাৰুনুষী ইউতাই শেয়ারহোল্ডার বেনিফিট হচ্ছে কোম্পানির পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য পণ্য এবং পরিষেবা প্রদান।শেয়ারহোল্ডার বেনিফিট বিষয়বস্তু ঐ কোম্পানির দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন পণ্য,যেমন খাবার কুপন,ডিসকাউন্ট টিকেট, প্ল্যাটফর্ম টিকেট, উপহার কার্ড।আবার কিছু কোম্পানি আছে যারা শেয়ার হোলডার্স বেনিফিট পরিকল্পনা নাই।





২।সিংও তরিহিকি বা ঋণ নিয়ে শেয়ার ক্রয় করা

সিংও তরিহিকি কি ? 

নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট (ক্রয়কৃত শেয়ার/খাৰুকেন)বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে নগদ অর্থ ঋণ নিয়ে শেয়ার ক্রয় করা,আবার নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট (ক্রয়কৃত শেয়ার/খাৰুকেন)বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট ধার করে তাহা শেয়ার বাজারে বিক্রি করাকে সিংও তরিহিকিMargin (finance) বলা হয়।সিংও তরিহিকির ক্ষেত্রে সর্বাধিক বন্ধকী সম্পদের ৩.৩গুণ সমতুল্য মূল্যের পরিমান শেয়ার লেনদেন সম্ভব।

কেন সিংও তরিহিকি?

শুধু মাত্র নগদ অর্থের গন্ডির মধ্যে শেয়ার লেনদেনর সীমাবদ্ধ থাকলে,আপনি যদি একটি শেয়ার কিনতে চান তবে যদি আপনার কাছে টাকা না থাকে তবে আপনি এটি কিনতে পারবেন না,অথবা যদি আপনি আগে থেকেই শেয়ার সার্টিফিকেট এর মালিক না হন তবে আপনি এটি বিক্রিও করতে পারবেন না।এমতবস্থায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণ সীমিত হওয়া সরবরাহ এবং চাহিদার পক্ষপাতের কারণে সামান্য লেনদেনে ই শেয়ার মূল্য অপ্রত্যাশিতভাবে উঠানামা করার ঝুঁকি থাকতে পারে,আর এই জন্যই সিংও তরিহিকি চালু করা হয়েছে।এই সিস্টেমের মাধ্যমে,নিজস্ব পুঁজি অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট(ক্রয়কৃত শেয়ার/খাৰুকেন)বন্ধক রেখে শেয়ার লেনদেন সম্ভব বিধায় বাইবাইদাকা,চাহিদা ও যোগান বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে ন্যায্য মূল্য গঠন উন্নীত করে।

সিংও ক্রয় এবং বিক্রয় কিভাবে করবো!

সিংও ক্রয় বা কাইদাতে

নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে ঋণ হিসেবে ৩.৩গুণ শেয়ার ক্রয় পদ্ধতিকে সিংও ক্রয় বা কাইদাতে বলে।এবংএই পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্রয়কৃত শেয়ার সার্টিফিকেটকে কাইতাতেগ্যায়উকু  বলে।

কাইতাতেগ্যায়উকু পরিশোধের উপায়

কাইতাতেগ্যায়উকু পরিশোধের দুটি উপায়,নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

1. কাইতাতেগ্যায়উকু প্রধানতঃশেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হয়।


বিক্রয় মূল্য থেকে গ্রহণকৃত ঋণ,কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যাহা অবশিষ্ট থাকিবে তাহা বিনিয়োগকারীর মুনাফা বা ক্ষতি হবে।
  • বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ পৃথকভাবে আদায় করা হবে।

2.কাইতাতেগ্যায়উকু এর সমপরিমাণ নগদ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হলে, তারপর ঋণদাতা থেকে বিনিয়োগকারীর নিকট শেয়ার সার্টিফিকেট ফেরৎ আনতে সক্ষম হন।

এই পদ্ধতিকে গেনবিকি বা সিনাউকে বলে।

সিংও বিক্রয় বা উড়িতাতে

নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে ঋণ হিসেবে ৩.৩গুণ বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট ধার করে তাহা শেয়ার বাজারে বিক্রি করাকে সিংও বিক্রয় বা উড়িতাতে বলে।এবং এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ধার করা শেয়ার সার্টিফিকেটকে উড়িতাতেগ্যায়উকু বলে।

উড়িতাতেগ্যায়উকু পরিশোধের উপায়

ধার(উড়িতাতেগ্যায়উকু)নিষ্পত্তির দুটি উপায় নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

1.ধার করা বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট বা উড়িতাতেগ্যকু,প্রধানতঃশেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ধার পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হয়।

ক্রয় মূল্য থেকে ধার করা বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট এর মূল্য ,কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যাহা অবশিষ্ট থাকিবে তাহা বিনিয়োগকারীর মুনাফা বা ক্ষতি হবে।


  • বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ পৃথকভাবে আদায় করা হবে।
  • 2.উড়িতাতেগ্যায়উকু এর সমপরিমাণ বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট ফেরৎ দিয়ে, তারপর ঋণদাতা থেকে বিনিয়োগকারীর নগদ সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।

    এই পদ্ধতিকে গেঁনওয়াতাসি বা সিনাওয়াতাসি বলে।

সিংও-জানদাকা কি এবং ভবিষ্যতের শেয়ার মূল্যের উপর তার প্রভাব?

সিংও-জানদাকা হচ্ছে,সিংও তরিহিকির অবশিষ্ট অপরিশোধিত ঋণ বা ধারকে বলা হয়।সিংও জানদাকা দুই ধরণের হয় (১)সিংওকাই জানদাকা বা কাইজান এবং(২)সিংওউড়ি জানদাকা বা উড়িজান
(১)সিংওকাই জানদাকা হচ্ছে,নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে(বন্ধক)অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে"শেয়ার"ক্রয় করেছেন অথচ এখনোও শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ না করাতে অবশিষ্ট অবস্থায় রয়ে গেছে এবং ঐ অবিক্রিত অবশিষ্ট শেয়ার গুলিকে সিংওকাই জানদাকা বলে।
(২)আর সিংওউড়ি জানদাকা হচ্ছে তার বিপরীত,নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে(বন্ধক)অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে"বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট"ধার করেছেন অথচ এখনোও তাহা ক্রয় না করায় অবশিষ্ট রয়ে গেছে এবং ঐ অবশিষ্ট "বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট"গুলিকে সিংওউড়ি জানদাকা বলে।
সিংও তরিহিকি সেবা একবার গ্রহণ করলে অবশ্যই তাহা ৬মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা বাধ্যতামুলক।
"বর্তমান সময়ের সিংওকাই জানদাকা ভবিষ্যতে বিক্রয় পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বিপরীতভাবে,বর্তমান সময়ের সিংওউড়ি জানদাকা ভবিষ্যতে ক্রয় পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।"

"অন্য কথায়,সিংওকাই জানদাকা যত জমা হবে ততই ভবিষ্যতে বিক্রয় চাপ বৃদ্ধি পাবে,ফলে শেয়ার মূল্য উত্থানের অন্তরায় হয়ে দাড়ায়,এবং ভবিষ্যতের শেয়ার মূল্য পতনের কারণ হয়।
বিপরীতভাবে,সিংওউড়ি জানদাকার(কারাউড়ি)স্ফীতির হার যত বাড়বে ততই ভবিষ্যতে ক্রয় চাপ বৃদ্ধি পাবে,ফলে শেয়ার মূল্য পতন রোধ সহায়তায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করায় ভবিষ্যতের মূল্য বৃদ্ধির পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।"

সিংওবাইরিত্সু কি?

থাইসাকু বাইরিত্সু হচ্ছে সিংও তরিহিকি লেনদেনের পরিস্থিতি দেখানোর জন্য একটি সূচকসিংও তরিহিকি সেবা গ্রহীতাদের কাই-জানদাকার (ক্রয় অবশিষ্ট)বিপরীতে উড়ি-জানদাকার(বিক্রয় অবশিষ্ট)অনুপাত,এর অর্থ দাঁড়ায় কাই-জানদাকা÷উড়ি-জানদাকা=এর গণনা ফল ১গুন এর বেশি হলে সিংওকাই বিনিয়োগকারী অধিক,আর যদি ১গুন এর কম হয় তবে সিংওউড়ি বিনিয়োগকারী অধিক।এটাকে আবার,কখনও সিংওবাইরিত্সু বলে অভিহিত করা হয়।তবে থাইসাকু বাইরিত্সু এবং সিংওবাইরিত্সু একই অর্থ প্রকাশ করে।কোনো কোনো ক্ষেত্রে থাইসাকু-হিড়িৎসু বা সিংও-হিড়িৎসু ও বলা হয়
"সিংওবাইরিত্সু হ্রাস পায়,এর মানে হল যে সিংওকাই জানদাকা হ্রাস পেয়েছে,তাই এটি মনে করা হয় যে ভবিষ্যতের দর পতনের ঝুঁকিও হ্রাস পেয়েছে এবং ক্রয়ের সুযোগ হিসেবে গণ্য করা হয়। "

1 comment :

  1. শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পড়ে ভালো লাগলো। আমি সম্প্রতি একটি ব্লগ সাইট পড়েছি শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে বাংলাতে যদি আপনাদের ইচ্ছা হয় আপনারা এখানে গিয়ে পড়তে পারেন শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শেয়ার মার্কেটে টাকা লাগাতে হয়।

    ReplyDelete