কাকাকু-তাই বেতসু দেকিডাকা

কাকাকু-তাই বেতসু দেকিডাকা

ডাকের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণের পর কি পরিমান শেয়ারের লেনদেন হয়েছে তাকে দেকিদাকা বলে এবংএই দেকিদাকাই একটি কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।অন্য কথায়,একটি শেয়াররের দেকিদাকা যত বেশি হবে বিনিয়োগকারীরা ঐ শেয়াররের প্রতি তত বেশি সক্রিয় ভেবে নিতে হবে।
যেমন বলা চলে:কোম্পানির পারফরম্যান্স আগের বছর তুলনায় বেশ ভাল হয়েছে,কোম্পানি জালিয়াতি ও তথ্য গোপন প্রকাশ পেরেছে, ইত্যাদি শেয়ার মূল্য প্রভাবিত হতে পারে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল খবর প্রকাশ পেলে বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ হওয়ায় শেয়ার লেনদেন বেড়ে যায় সাথে সাথে দেকিদাকাও বাড়ে ।
নিচে কিছু নমুনা দেওয়া হলো 
(উদাহরণ 1)কোম্পানির শেয়ার মূল্য সূচকের বড় পতন হওয়া সত্ত্বেও যদি দেকিদাকা বৃদ্ধি পায় 
*বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ হওয়ায় সম্ভাবনা আছে।
*অচিরেই মূল্য উত্থানের সম্ভাবনা আছে।
(উদাহরণ 1)কোম্পানির শেয়ার মূল্য সূচকের বড় উত্থান হওয়া সত্ত্বেও যদি দেকিদাকার  পরিমাণ কমে যায় 

*বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ কমে আসছে
*অচিরেই মূল্য পতনের সম্ভাবনা আছে।


"প্রতিটি মূল্য অন্তরন্তর শেয়ারের পরিমান=কাকাকু-তাই বেতসু দেকিডাকা "
"এই ভাবে, দেকিডাকা হচ্ছে প্রতি সময় অন্তরন্তর কি পরিমান লেনদেন হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার জন্য একটি সূচক,তবে এখন পরিচয় করিয়ে দিবো কাকাকু-তাই বেতসু দেকিডাকা সময়ের প্রাধান্য না দিয়ে প্রতিবার শেয়ার মূল্যের(প্রতিবার ডাকের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ) জন্য কি পরিমান লেনদেন হয়েছে  সেই সূচক"
আমার মনে হয় একটু কঠিন মনে হচ্ছে তাই একটি নির্দিষ্ট উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাক।
শেয়ার মূল্য দেকিডাকা
৫০০টাকা 
১৫,০০০টি শেয়ার
৫০৫টাকা 
২৫,০০০টি শেয়ার
৫১০টাকা 
৪০,০০০টি শেয়ার
৫১৫টাকা 
১০,০০০টি শেয়ার
উপরের টেবিল হিসাবে ৫০০টাকা থেকে ৫১৫টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন মূল্যের শেয়ারের মোট দেকিডাকা হলো ৯০,০০০ শেয়ার ।

"উপরের টেবিলে ৫১০ টাকা মূল্যের শেয়ার সবচেয়ে বেশি কেনা হয়েছে, বিধায় বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ারটির ন্যায্য মূল্য ৫১০টাকা নির্ধারণ করেছে ভেবে নিতে পারি।"
যেহেতু শেয়ার মূল্য উঠা-নামা করে,যদি ৫১০ টাকায় একটি শেয়ার কিনি অবশ্যই দর পতন হতেও পারে একবার দর পতন হয়ে ৫১০টাকায় মূল্য ফিরে আসলেও আবার সহজেই এর চেয়ে বেশি মূল্য-উত্থান সম্ভবনা না-ও থাকতে পারে।
কারণ ন্যায্য মূল্য ৫১০টাকা দিয়ে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ারটি কিনেছে যে সমস্ত বিনিয়োগকারীদেড় শেয়ার মূল্য ৫১০ টাকার নিচে নেমে গেয়েছিলো,দর ফিরে আসার ফলে তারা ৫১০টাকায় বিক্রি করে অব্যাহতি পাওয়ার চেষ্টা করবে,এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা একযোগে বিক্রি শুরু করিলে ৫১০টাকা থেকে মূল্য বাড়া কঠিন হয়ে পরে। 

একই ভাবে বিপরীত দিকে ভাবলে,ধরুন,উদাহরণস্বরূপ,শেয়ার মূল্য ধীরে ধীরে ৫৫০ টাকা থেকে কমতে শুরু করেছে ।
এমনকি এই ক্ষেত্রেও উপরের টেবিলের কাকাকু-তাই বেতসু দেকিডাকা লক্ষ্য করলে বুঝা যাবে,৫১০টাকা দিয়ে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ারটি কিনার রেকর্ড আছে বলে ৫১০ টাকায় বাজার দর নেমে আসলেই সাথে সাথে নিকবে প্রস্তুতি নিয়ে আছে এটাই বুঝায়।
যদি তাই হয়,শেয়ার মূল্য ধীরে ধীরে কমে ৫১৫ টাকা বা ৫১২টাকার কাছা কাছি এলে বিনিয়োগকারীরা একযোগে ক্রয় শুরু করিলে ৫১০টাকার চেয়ে মূল্য পতন হওয়ার সম্ভবনা থাকে না
"অন্য কথায়,শেয়াররের যেই মূল্যটিতে বেশি লেনদেন (দেকিডাকা)বেশি হয়েছে ঐ অবস্থায় বাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বা নিম্নগামী প্রবণতা থাকা সত্বেও বাজারের প্রবাহ বন্ধ হয় যায়, বিধায় ন্যায্য মূল্য ৫১০টাকা রেসিস্টেন্স লাইন বা সাপোর্ট লাইন হিসাবে কাজ করে।"


অরেঞ্জ কালার দিয়ে আঁকা ন্যায্য মূল্যের  লাইন দুটিতে যেসমস্ত রওসকু-আসিগুলি স্পর্শ করেছে ওই মূল্যগুলিতে সবেচেয়ে বেশি দেকিডাকার পরিমান হয়েছে তা সহজেই বোঝা যায়। এই দুটি লাইন রেসিস্টেন্স লাইন এবং  সাপোর্ট লাইনের ভূমিকা পালন করে বককসু-ছোবা হয়েছে, আর এই রেসিস্টেন্স লাইন অতিক্রম করতে পারলেই  বাজারের  আশু উত্থান আশা করা যেতে পারে ।

দেকিদাকা কিভাবে দেখব ・ব্যবহার করবো 
  • দেকিদাকা হ্রাস পাওয়া পরিস্থিতি থেকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করলে অবিলম্বে বাজার প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশা করা যায়।
  • দেকিদাকা হ্রাস পেলে তাত্ক্ষণিক জনপ্রিয়তা লোপ পাওয়ায় অবিলম্বে দরপতন ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে।
  • দেকিদাকা ইডোহেইকিন ছেন অতিক্রম করা দিনগুলি বেশি হলে অচিরেই ঊর্ধ্ব মূল্য আশা করা হচ্ছে।
  • ঝাঁপ দিয়ে মূল্য বেড়ে গিয়ে তুঙ্গে পৌঁছিলে এবং দেকিদাকা দ্রুত হ্রাস পেলে তাত্ক্ষণিক বিক্রি করে অব্যাহতি পাওয়াটাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।
  • দীর্ঘ সময় ধরে স্বল্প-দেকিদাকা চলতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে দেকিদাকা বৃদ্ধি পেলে বুঝতে হবে, কোম্পানির কোনো ভালো পারফরমেন্সের কারণে নুতন দর-পত্তন শুরু হতে যাচ্ছে।
  • ছোট আকারের শেয়ারের দেকিদাকা তুঙ্গে পৌঁছে যাওয়া মূল্য ৫০০০০০ বা তার কিছু অধিকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
  • মাঝারি ও বড় আকারের শেয়ারের দেকিদাকা ১০০০০০০০ শেয়ারে তুঙ্গে পৌঁছানোর পর হ্রাস পেলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

দেকিডাকা ইডোহেইকিন-ছেন(出来高移動平均線)

দেকিডাকা হেইকিন-ছেন বা দেকিডাকা ইডোহেইকিন-ছেন হচ্ছে ইডোহেইকিন-ছেন এর মতো একটি সূচক,যাহা অতীতের একটি নির্দিষ্ট সময়কালে দেকিডাকা(出来高)গড় মূল্য গণনা করে গ্রাফের মাধ্যমে লাইন দিয়ে প্রকাশ করাকে দেকিডাকা ইডোহেইকিন-ছেন লাইন বলে।যেহেতু দেকিডাকা বাজার মূল্যের(রওসকু-আসি) তুলনায়  আগাম হ্রাস-বৃদ্ধি প্রবণতা করে বিধায় দেকিডাকা ইডোহেইকিন-ছেন বাজারের দ্রুত পরিবর্তন প্রদর্শন করে।
সুতরাং,স্বল্পমেয়াদী বাজারের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা স্পর্শকাতর হওয়ায় ধোঁকা খাওয়ার সম্ভবনাই বেশি।অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদী বাজারের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা নিস্তেজ হওয়ায় ধোঁকা খাওয়ার সম্ভবনা কম হবে।
"মূলত, ইডোহেইকিন-ছেন এর গতির তুলনায় শেয়ার মূল্য বেশ পিছিয়ে পড়ে কিন্তু দেকিডাকা ইডোহেইকিন-ছেন একেবারে ভিন্ন।"

No comments :

Post a Comment